কালিগঞ্জ থেকে: গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ছিল বিশ্ব ভালবাসা দিবস বা ভ্যালেন্টাইনস ডে। দিবসটি স্মরণীয় করে রাখতে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার বহুল আলোচিত১নং কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাফিয়া পারভিন তার পরকীয়া প্রেমিক সাতক্ষীরা সদর থানার পুরাতন সাতক্ষীরা গ্রামের আব্দুল হাকিম এর পুত্র এবং বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক কৃষ্ণনগর শাখার সহকারী ব্যবস্থাপক বা ক্যাশিয়ার ১ সন্তানের জনক রফিকুল ইসলামের সঙ্গে রাত কাটানোর জন্য বাসায় দাওয়াত দেয়। যথারীতি দাওয়াত কবুল করে রাতের অন্ধকারে চুরি করে চেয়ারম্যানের বাসায় ঢুকলে ঘটে বিপত্তি। পড়বি না পড় মালির ঘাড়ে। সেই প্রবাদ আছে না চোরের ১০ দিন আর গৃহেস্তের ১দিন।
খবর জানতে পেরে চেয়ারম্যান সাফিয়ার স্বামী কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পিএস খ্যাত এবং কালিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং থানা আওয়ামী লীগের সম্পাদক সাজেদুল হক সাজু ওই রাতেই ছুটে যায় স্ত্রী সাফিয়ার বাসায়। সেখানে পৌঁছে তার সহযোগী শাহরিয়ার, চেয়ারম্যানের ড্রাইভার কেরামত আলী, শহীদকে সাথে নিয়ে হাতেনাতে পরকীয়া প্রেমিক ব্যাংক কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম এবং চেয়ারম্যান কে এক ঘরে ধোরে ফেলে বেধড়ক পিটুনি শুরু করে। মারতে মারতে রফিকুলকে ঘরের দরজার সামনে নিয়ে আসলেই এর মধ্যে কৌশলে চেয়ারম্যান সাফিয়া ঘরের ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেয়। এদিকে বেচারা পরকীয়া প্রেমিক রফিকুল ইসলাম একাই বেধড়ক পিটুনি হজম করে ভোরে ছাড়া পেয়ে গোপনে সাতক্ষীরা একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়।
ওই সময় স্বামী সাজুর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য এইচএম গোলাম রেজাকে মোবাইলের মাধ্যমে পায়ে ধরে স্বামী সাজুর হাত থেকে বাঁচানোর অনুরোধ জানায় নাহলে সে আত্নহত্যা করবে বলে উনাকে জানায়। খবর শুনে এইচ এম গোলাম রেজা ওই রাতেই ঢাকা থেকে কালিগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। কালিগঞ্জে বাসায় পৌঁছে সকাল ১১ টায় ইউনিয়ন পরিষদের প্যাডে চেয়ারম্যান সাফিয়ার মুচলেকা নিয়ে পরবর্তীতে মীমাংসার স্বার্থে ছেড়ে দেওয়া হয়। অথচ মুচলেকা দেওয়া সত্ত্বেও পরবর্তীতে সাবেক সংসদ সদস্য এইচএম গোলাম রেজার মধ্যস্থতা মেনে নেয়নি চেয়ারম্যান সাফিয়া।
এই পুরা ঘটনাটি কালিগঞ্জ উপজেলা এবং কৃষ্ণনগর ইউনিয়নবাসী সবাই জানে। সাবেক সংসদ সদস্য এইচ এম গোলাম রেজা ২০০৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পরে চেয়ারম্যান সাফিয়ার বাবা সাবেক চেয়ারম্যান কে এম মোশাররফ হোসেন উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এইচ এম গোলাম রেজার খুব আস্থাভাজন প্রিয়জন ছিলেন। সেই সুবাদে গোলাম রেজার ঢাকার বাসায় থেকে সেই সময় সাফিয়া পড়াশোনা করা অবস্থায় ২০১১ সালে শ্যামনগর থানার গোবিন্দপুর গ্রামের মুজিবর রহমান গাজীর পুত্র ফয়সাল রহমান রাসেল এর সঙ্গে পালিয়ে বিয়ে করে। ওই সময় বাবা চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন মেনে না নিলেও গোলাম রেজার মধ্যস্থতায় মেনে নেয়। পরে তাদের ঘরে ৪ বছরের ১ পুত্র সন্তান রেখে ২০১৯ সালে স্বামী রাসেলকে তালাক দিয়ে গত৬/২/২০২০ ইং তারিখে ১লক্ষ ৯৯ হাজার ৯৯৯ টাকা কাবিনে সাজেদুল হক সাজুর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়। এখন নিজের ভাবমূর্তি এবং পরকীয়া ঢাকতে চেয়ারম্যান সাফিয়া পারভিন বাদী হয়ে গত২১/৩/২০২৩ ই;তারিখে স্বামী সাজেদুল হক সাজুকে একমাত্র আসামি করে সাতক্ষীরার বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারায় প্রতারণা ও ধর্ষণের মামলা দায়ের করেছে। মামলা নং পিটিশন ১৪৩/২৩। মামলাটি তদন্তের জন্য আদালত সাতক্ষীরা পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিকেশন কে নির্দেশ দিয়েছেন। মামলায় চেয়ারম্যান সাফিয়া উল্লেখ করেছেন গত ৯ /১১/ ২০২২ ইং তারিখে দুইজনার সম্মতিতে ইসলামিক শরীয়ত মোতাবেক ১ কোটি টাকার দেনমোহরে তার সঙ্গে ইউনিয়ন পরিষদের দ্বিতীয় তলায় বিবাহ হয়। সেই সুবাদে বিয়ের রেজিস্ট্রি কাবিন জাল করে প্রতারণা এবং বিভিন্ন মেয়েদের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক করা সহ জাল কাবিননামা তৈরি করে স্ত্রী না হওয়া সত্ত্বেও স্ত্রীর মতন ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত ধর্ষণ এবং বিয়ে অস্বীকার করায় এ মামলা করা হয়েছে। এ সম্পর্কে জানার জন্য স্বামী সাজেদুল হক সাজুর কাছে ফোন দিলে,তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন,২০২০ সালে সাফিয়ার সঙ্গে তার ১ লক্ষ ৯৯ হাজার ৯৯৯ টাকা দেনমোহরে বিয়ে হয়।তবে সাফিয়ার নির্বাচনের জন্য বিয়েটা গোপন রাখা হয়।কিন্তু সে চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে তার নামে অনেক বাজে কথা আমি শুনতে পাই।কিন্তু আমি সেগুলো বিশ্বাস করিনি।গত ১৪ ফ্রেব্রুয়ারি রাতে আমি তার বাড়িতে পরকীয়া প্রেমিক ব্যাংক কর্মকর্তা রফিকুলকে ও সাফিয়াকে এক ঘরে ধরে ফেলি।পরে আমি সাবেক সংসদ সদস্য এইচ এম গোলাম রেজার অনুরোধে উনার মধ্যস্হতায় মুচলেকা নিয়ে কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জকে অবগত করে ছেড়ে দেয়।তার পরকীয়াকে ঢাকতে পরে সে একটি কোটি টাকার জাল কাবিননামা করে আমার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছে।আমি সেটা আদালতের মাধ্যমে প্রমান করবো।আমি সেই রাতের পরকীয়ার ঘটনার যাবতীয় তথ্য প্রশাসনকে দিয়েছি।এ প্রসঙ্গে ঘটনার সত্যতা জানার জন্য বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক কৃষ্ণনগর শাখার সহকারী ব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলামের নিকট ফোন দিয়ে সাংবাদিক পরিচয়ে ১৪ ফ্রেব্রুযারি রাতের ঘটনা জানতে চাইলেফোন কেটে দেন। মামলার বাদী সাফিয়া পারভীনের নিকট ঘটনার বিষয়ে জানার জন্য তার ব্যবহৃত নাম্বারে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। সাবেক সংসদ সদস্য এইচএম গোলাম রেজার নিকট চেয়ারম্যান সাফিয়া পারভিন এবং তার স্বামী সাজেদুল হক সাজুর সালিশ, মুচলেকা বিষয় জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, চেয়ারম্যান সাফিয়ার বাবা মোশাররফ হোসেন আমার খুব রাজনৈতিক প্রিয় ব্যক্তিত্ব মানুষ ছিলেন। সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হওয়ার পরে সাফিয়াকে আমি নিজের সন্তানের মতন ভালোবাসতাম। কিন্তু বিভিন্ন পরকীয়ায় জড়িয়ে মেয়েটি নষ্ট হয়ে গেছে।
১৪ ফেব্রুয়ারি তার বাসায় ব্যাংক কর্মকর্তা রফিকুলকে নিয়ে সে রাত্র যাপন করে।সেটা তার স্বামী সাজু হাতেনাতে ধরে ফেলে।তখন সে অপরাধ করেছে স্বীকার করে তাকে বাঁচানোর জন্য বলে।নাহলে সে আত্মহত্যার হুমকি দেয়। আমি বিষয়টি নিয়ে দ্রুত সেই রাতেই ঢাকা থেকে কালিগঞ্জে এসে মুচলেকা দিয়ে তাকে ছাড়িয়ে নেয়। বিষয়টি গোপনে মীমাংসা করার জন্য তাদেরকে আমি ঢাকায় যেতে বলি। ঢাকায় যেয়ে পরবর্তীতে সে মিমাংসা করতে অস্বীকার করে। পরে শুনলাম সে সাজুর নামে কয়েকটি মিথ্যা মামলা করেছে।সাজুকে বিয়ে করে এই ৩ বছরে সাজুর কাছ থেকে একটি বাড়ি,প্রাইভেট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করা সহ সাজুর কাছ থেকে অনেক টাকা নিয়েছে।তার পরকীয়াকে ঢাকতে সে এসব মিথ্যা মামলা করেছে।বিয়ে এবং পরকীয়া করা বর্তমানে তার পেশায় পরিনত হয়েছে যে কারণে আমি তার সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করেছি। আসলে সে একজন বাজে চরিত্রের এবং টাকার জন্য পরকীয়ায় বিভিন্ন পর পুরুষে আসক্ত হয়ে পড়েছে।