ক্রিমিয়া সেতুতে বিস্ফোরণের পর ইউক্রেনজুড়ে হামলা জোরদার করেছে রুশ বাহিনী। গতকাল সোমবার রাজধানী কিয়েভসহ দেশটির বেশকিছু স্থানে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।
আজ মঙ্গলবারও হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলীয় লাভিভের গভর্নর ম্যাক্সিম কোজিৎস্কিভি জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ওই অঞ্চলের দুটো জ্বালানি স্থাপনায় অন্তত তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত করেছে। ফলে সেখানে বিশাল এলাকায় পরপর দ্বিতীয় দিনের মত বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
লাভিভ শহরের মেয়র বলেছেন, শহরের একটি “গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে” রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় শহরের একাংশে বিদ্যুৎ চলে গেছে।
গতকাল সোমবার রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রধান একটি টার্গেট ছিল লাভিভ। হামলার পর লাভিভ শহরের বিরাট এলাকায় বিদ্যুৎ এবং সেই সাথে পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
স্থানীয় প্রশাসন জানায়, সোমবার রাত নাগাদ তারা ৯৫ শতাংশ বিদ্যুৎ এবং ৭০ শতাংশ পানি সরবরাহ চালু করতে সমর্থ হয়। কিন্তু পরদিনই অর্থাৎ মঙ্গলবারের হামলার পর শহরের ৩০ শতাংশ এলাকা আবারও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলে মেয়র অন্দ্রে সাদোভি টেলিগ্রামে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, শহরের পরিস্থিতি “গুরুতর”।
নুতন করে ছোঁড়া রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে দেনেপ্রপেট্রোভস্ক অঞ্চলের বিদ্যুৎ অবকাঠামোর ব্যপক ক্ষতি হয়েছে বলে স্থানীয় প্রশাসন বলছে।
আঞ্চলিক প্রশাসনের প্রধান জানিয়েছেন, পাভলোরাড এবং কামিয়ানস্কি জেলা দুটোতে এখন কোনো বিদ্যুৎ নেই।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও বলছে, তাদের “বিমান এবং যুদ্ধজাহাজ থেকে ছোঁড়া নিখুঁত এবং লক্ষ্যভেদী দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র” দিয়ে ইউক্রেনের জ্বালানি এবং সামরিক অবকাঠামোতে আঘাত করা হয়েছে।
রুশ মন্ত্রণালয় বলছে, লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে এবং “নির্ধারিত সব টার্গেটেই” আঘাত করা গেছে।
তবে ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রশাসন বলছে, রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা আজ মঙ্গলবারেও অব্যাহত ছিল। মঙ্গলবারের হামলার প্রধান টার্গেট ছিল পশ্চিমের লাভিভ এবং দক্ষিণের শিল্প নগরী জাপোজিরা। যেখানে আজ নতুন করে আরও প্রায় এক ডজন রুশ ক্ষেপণাস্ত্র এসে পড়ে।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা বলেছেন, রাশিয়া “জনগণের স্বাভাবিক জীবন যাপন অসহনীয় করে তোলার লক্ষ্য নিয়ে” পরিকল্পিতভাবে জ্বালানি অবকাঠামো টার্গেট করছে। তিনি বলেন, রাশিয়ার এসব হামলা যুদ্ধাপরাধের সামিল। তবে রাশিয়া সবসময় এ ধরনের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। শুরুর দিকে ইউক্রেনজুড়ে হামলা চালিয়েছিল রাশিয়া। কিন্তু পরবর্তীতে বেশ কিছু সময় ধরে তারা নির্দিষ্ট এলাকায় সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু রাশিয়ার সঙ্গে অধিকৃত ক্রিমিয়া সেতুতে বিস্ফোরণের পর আবারও ইউক্রেনে পুরোদমে হামলা শুরু করে রুশ বাহিনী।
সূত্র: বিবিসি।